বইয়ের নাম: দ্য নেকেড ফেস
লেখক: সিডনি শেলডন
রূপান্তর: অনীশ দাস অপু
জনরা: রহস্যোপন্যাস
প্রকাশনী: অনিন্দ্য প্রকাশ
মুদ্রিত মূল্য: ১৮০/-
ব্যক্তিগত রেটিং: ৪.২/৫
.
.
বৃষ্টিমুখর এক দিনে ব্যস্ত ম্যানহাটনের কোলাহলময় রাস্তায় মধ্যে
পিঠে ছুরি খেয়ে মারা গেলো নিউইয়র্কের বিখ্যাত সাইকোএনালিস্ট জাড স্টিভেন্সের রোগী
জন হ্যানসন। হ্যানসনের গায়ে ছিল ডক্টর জাডের হলুদ বর্ষাতি।
খুনের তদন্তে মাঠে নামে দুজন গোয়েন্দা।
একজন লেফটেন্যান্ট ম্যাকগ্রিভি,
অন্যজন ফ্রাঙ্ক অ্যাঞ্জেলি। তদন্তের শুরুতেই খুনের সন্দেহের
মূলে রাখা হয় ড. জাডকে। ম্যাকগ্রিভির সাথে পুরনো দ্বন্দের দরুণ তিনি পিছু লাগতে
শুরু করেন ড. জাডের। তার চেষ্টা সর্বোচ্চ মূল্যে জাডকে তিনি খুনী প্রমাণ করিয়েই
ছাড়বেন।
ড. স্টিভেন্স জাড - আপাতদৃষ্টিতে শান্ত, সুদর্শন, নিরীহ এবং কর্মপ্রিয়
একজন মানুষ। প্রথম
স্ত্রী এলিজাবেথের মৃত্যুর পর বিয়ে করেননি আর। রোগী হ্যানসনের মৃত্যু রহস্য সমাধা
হতে না হতেই আরেকটি খুনে জড়িয়ে যান তিনি। এবার নৃশংসভাবে খুন হয় তারই অফিসের
রিসেপশনিস্ট - ক্যারোল।
প্রায় একদিনের ব্যবধানে দু দুটো খুন, তাও আবার ভিক্টিমরা
জাডেরই কাছের মানুষ। সন্দেহের তীর বারবার এসে পড়তে থাকে জাডের দিকে। হতবিহ্বল জাড
বুঝতে পারেন না শত্রুবিহীন তাকে কে এভাবে খুনের দায়ে ফাঁসাতে চাইছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত
তিনি বুঝলেন খুনীর মূল টার্গেট আসলে তিনিই!
তার উপর হামলা চালানো হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান জাড। দুই
গোয়েন্দার মধ্যে অ্যাঞ্জেলি ছাড়া কেউ তাকে বিশ্বাস করেনা। বাধ্য হয়ে প্রাইভেট
ইনভেস্টিগেটরের দ্বারস্থ হলেন জাড,
যার নাম নরমান জেড. মুডি।
মুডি খুনীর জন্যে ফাঁদ পাতে। খুনী সে ফাঁদে ধরা দিয়েও দেয় না।
উপরন্তু খুন হয়ে যায় মুডি।
কিন্তু মরার আগে জাডের কাছে প্রশ্ন রেখে যায়, 'ডন ভিনটনের নাম
শুনেছেন কখনো?'
ডন ভিনটন কে বা কী সে খোঁজে অস্থির হয়ে যান ড. জাড। একদিকে
পুলিশী চাপ, অন্যদিকে
নিজ জীবনের আশংকা রীতিমতো পাগল করে তুলল জাডকে। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে তার
সামনে উঠে এলো সন্দেহাতীত একটি নাম - অ্যান ব্লেক।
অ্যান ব্লেক- যাকে দেখে বুকমোচড় দেয়া অনুভূতি হয় জাডের। রোগী
হিসেবে জাডের সাথে তার পরিচয় হলেও আজ পর্যন্ত নিজের রোগের কথা সে বলেনি জাডকে।
কিন্তু কীভাবে অ্যান ব্লেক জড়িত এসব হত্যাকান্ডের সাথে?
একদিকে লেফটেন্যান্ট ম্যাকগ্রিভি খুঁজে চলেছে জাডকে জেলে পুরবে
বলে, অন্যদিকে
একদল খুনী হামলা চালাচ্ছে বারবার জাডকে মেরে ফেলবে বলে। গোয়েন্দা অ্যাঞ্জেলি ছাড়া
কেউ নেই জাডের পাশে।
নিরপরাধ জাড কী বেঁচে ফিরতে পারবেন অবশেষে?
.
ব্যক্তিগত মতামত:
টানটান উত্তেজনার একটি বই এটি। হ্যানসনের খুন থেকে শুরু করে মুডির
খুন পর্যন্ত প্রত্যেকটি খুনেই একধরণের খারাপ লাগা কাজ করে। জাডের সাথে আমি নিজেও
হন্যে হয়ে খুনীকে খুঁজছিলাম। এমনকি জাডের উপর বারবার হামলা হওয়ায় নিজেকে সেখানে
কল্পনা করে নিজেরই একপ্রকার অসহায় লাগছিলো। জাডের জন্যে সহানুভূতির কাজ করেছে।
সেটা অবশ্য লেখকের লেখনীর অবদানেই। শেষের দিকের টুইস্টটি ভালো লেগেছে।
রূপান্তর কাঠখোট্টা ছিল না;
সাবলীল, চটুল।
অনীশ দাস অপুর লেখনীর প্রতি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস রাখা যায়।
হ্যাপী রিডিং।
1 Comments
দূর এখন পড়া লাগবে।
ReplyDelete