বাংলাদেশ রক্তের ঋণ (Bangladesh: A legacy of Blood)
মূল লেখক:
অ্যান্থনি
ম্যাসকারেনহাস
অনুবাদক:
মোহাম্মদ
শাহজাহান
ধরন:
রাজনীতি
ও
হত্যাকাণ্ডের
ইতিহাস
প্রকাশনী:
হাক্কানী
পাবলিশার্স
প্রথম
প্রকাশ:
১৯৮৮
মুদ্রিত
মূল্য:
২৫০
টাকা
পৃষ্ঠা
সংখ্যা:
২১৬
- রিভিউ:
- বঙ্গবন্ধুকে
হত্যার
ষড়যন্ত্র
কোথায়,
কীভাবে
হয়েছিল?
- ১৯৭৫
এর
১৫
আগস্ট
দিনটা
কেমন
ছিল?
প্রকৃতি
কী
সেদিন
কেঁদেছিল?
- তাজউদ্দীন
আহমদসহ
জাতীয়
চার
নেতাকে
জেলের
ভেতরে
কারা
হত্যা
করেছিল?
- জিয়াউর
রহমান
কী
শেখ
মুজিব
হত্যাকাণ্ডে
জড়িত?
- জিয়াউর
রহমানকে
কীভাবে
হত্যা
করা
হয়েছিল?
- জেনারেল
এরশাদ
কী
জিয়া
হত্যায়
জড়িত?
উত্তরগুলো জানা যাবে বইটি পড়ার মাধ্যমে। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায়। উত্তরগুলো নির্ভরযোগ্য তো? ইতিহাসটা সত্য তো?-এই আশঙ্কাটা থেকেই যায়। কারণ ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে বার বার। যখন যে দল ক্ষমতায়, সে দলের অবৈধ কাজগুলো বৈধ প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে বার বার।
বাংলাদেশ রক্তের ঋণ একটি রেফারেন্স বই। আর বইটির লেখক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসও কোনো পক্ষের দালাল ছিলেন না। বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। ১৯৭১ সালে অ্যান্থনি মাসকারেনহাস প্রথম সাংবাদিক, যিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়ে লন্ডনের দি সানডে টাইমস পত্রিকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ড বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন।
৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রাটা মধুর ছিল না, পথে পথে কাঁটা বিছানো ছিল। দেশ গড়ার দায়িত্ব নিলেন শেখ মুজিব। শেখ মুজিবের আশেপাশের প্রতিটি মানুষ ছিল এক একটা মীর জাফর। তাজউদ্দিন আহমদসহ আরও যারা শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল, খুব সুকৌশলে শেখ মুজিবের কাছ থেকে তাঁদের সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
দেশে এক অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিল। দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, কৃত্রিম খাদ্য সংকট, ফলে দুর্ভিক্ষ। সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো। দেশের কোথাও কোথাও শেখ মুজিব বিরোধী স্লোগান শোনা গেল। শুরুটা এভাবেই।
শেখ মুজিবকে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল অন্তত আরও ছয় মাস আগে। এটা ভালো করেই জানতেন খন্দকার মোশতাক। এই সেই খন্দকার মোশতাক, যে বঙ্গবন্ধুর বাবার লাশ নিজে মাটিতে শুইয়ে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মোশতাককে এতটাই ভালোবাসতেন আর বিশ্বাস করতেন যে, তিনি স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বলতেন, "আমার কিছু হয়ে গেলে বাচ্চাগুলোকে নিয়ে মোশতাকের কাছে যাইয়ো।"
খন্দকার মোশতাক চাইলে ১৫ আগস্ট আটকে দেওয়া যেত। কিন্তু তা হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক নিজেই রাষ্ট্রপতি হন। তবে এই বিশ্বাসঘাতকের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
মেজর ফারুক, মেজর রশীদ এরা আত্মস্বীকৃত খুনি। গর্বের সাথে প্রকাশ্যে বলে বেড়িয়েছেন, "শেখ মুজিবকে আমরা হত্যা করেছি।" সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বইটির লেখককেও।
শেখ মুজিবকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, জেলের ভেতর অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে জাতীয় চার নেতাকে। শেখ মুজিবের অনুসারীরা যেন আর উঠে দাঁড়াতে না পারে, সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছিল।
জেনারেল জিয়াউর রহমানের উত্থানটা বিস্ময়কর। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন তিনি। প্রথমদিকে সেনাবাহিনীর ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করলেও পরে নিজ রূপে আত্মপ্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দল বিএনপি গঠন করেন। জিয়াউর রহমানের পথটিও কোমল ছিল না। মাত্র পাঁচ বছরে তিনি ২০টি বিদ্রোহ আর সামরিক অভ্যুত্থানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। ২১তম সামরিক অভ্যুত্থানে আর পারেন নি, নিহত হয়েছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ১০ বছরের ইতিহাস দুঃখের ইতিহাস, রক্তের ইতিহাস, স্বার্থপরতার ইতিহাস, বেঈমানীর ইতিহাস, বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস। বইটি পড়ে এটাই মনে হবে।
- পাঠ
প্রতিক্রিয়া:
- বইটি
আপনি
কেন
পড়বেন:
0 Comments